প্রিয় গ্রাহক, রকমারি আপনার পছন্দের ক্যাটাগরির নতুন যে কোন পণ্য এবং এক্সক্লুসিভ সব অফার সম্পর্কে সবার আগে জানাতে চায়।
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন। মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
follower
আবদুল হালীম আবু শুককাহ
মিসরের খ্যাতনামা পণ্ডিত, গবেষক ও লেখক আবদুল হালীম আবু শুককাহ। তিনি একজন মহান শিক্ষক ও বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। উম্মাহর মধ্যে সত্যিকারের ইসলামী চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তার প্রকৃত আবেগ ছিল। তিনি শেখা ও শিক্ষাদানে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আবদুল হালীম আবু শুককাহ মিসর, সিরিয়া, কাতার ও কুয়েতে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি কিছু সময়ের জন্য জর্ডানে বসবাস করেন। তারপরে সিরিয়ায় গমন করেন। কাতারে শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ১৯৫৬- ১৯৬৭ সময়কালে কাতারে ছিলেন। তারপর কুয়েতে চলে যান যেখানে তিনি আরও বারো বছর (১৯৬৭-১৯৭৮ সাল পর্যন্ত) বসবাস করেন। এই সময়ে তিনি প্রায়শই গ্রীষ্মের ছুটিতে সম্মানিত আলেম ও মুহাদ্দিস শায়খ নাসির আল-দীন আল-আলবানীর অধীনে হাদিস অধ্যয়ন করার জন্য সিরিয়ায় যেতেন। তার বিশেষ মনোযোগ ছিল হাদীস অধ্যয়নের প্রতি এবং তিনি হাদিস শাস্ত্রে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। সিরিয়ায় গেলেই বিশেষ করে নিজের বোনকে দেখে আসতেন। ১৯৭৮ সালে তিনি মিসরে ফিরে আসেন, যেখানে তিনি ১৯৯৫ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত বসবাস করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বাকবিতন্ডা ও তর্কের ঊর্ধ্বে উঠে নারী অধিকার সংক্রান্ত ইসলামের শাশ্বত সত্য আদর্শকে সমুন্নত করার মহান গৌরবের অধিকারী এই জ্ঞানপিপাসু পন্ডিত ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ। তিনি নিরপেক্ষ ভূমিকা অবলম্বন করেছেন। গ্রন্থগুলোতে উদ্ধৃতি চয়নে কুরআন, সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফ থেকেই সহায়তা নিয়েছেন। আলোচিত বিষয়বস্তুকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়ার ক্ষেত্রে বিস্তারিত ব্যাখ্যা সম্বলিত দলীল প্রমাণাদি পেশ করেছেন। তিনি বাস্তব জীবনে নারী ও পুরুষের পারস্পরিক সম্পর্ক ও অবস্থান সম্পর্কীয় বিষয়াদির ক্ষেত্রে ইসলামের সুমহান শিক্ষাকে অতি নৈপুণ্যের সাথে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। সামাজিক জীবনের সুখ-সমৃদ্ধি ও আদর্শ সমাজ গঠনে নারীর দায়-দায়িত্ব এবং ভূমিকাকেও অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। তার সপক্ষে নির্ভরযোগ্য হাওয়ালা এবং বিশদ ব্যাখ্যার বিরাট সমাবেশ ঘটিয়েছেন। তিনি ইসলামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল সমস্যার উপর নিয়মিত জ্ঞানগর্ভ লেখা লিখেছেন। তাঁর এ সব রচনার সংকলনগুলিও ভবিষ্যত প্রজন্মকে বহু মূল্যবান দিক নির্দেশনা দেবে। লেখক সত্যিকার অর্থেই একজন ধৈর্যশীল, বিদ্যানুরাগী, আল্লাহপ্রেমিক ও রসূল (স)-এর একনিষ্ট অনুসারী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। প্রতিটি বিষয়ে তিনি বারবার চিন্তা-ভাবনা করেছেন এবং শ্রেষ্ঠ পন্ডিতবর্গের সাথে সে বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত ক্রমাগত গবেষণা ও সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। সীমিত পরিসরে যারাই তাঁর বন্ধুত্ব ও সাহচর্যলাভে সমর্থ হয়েছেন, তারাই নিঃসন্দেহে তাঁর যোগ্যতা, গভীর পান্ডিত্য, গঠনমূলক সমালোচনা, সত্যের পথে ধৈর্য ও সাহসিকতা, সত্যবাদিতা ও হকের উপর অবিচলতার স্বীকৃতি দানে বাধ্য হয়েছেন। তিনি একজন সত্যবাদী, উদারমনা, বন্ধুসুলভ, বিজ্ঞ সমালোচক ও মহৎচরিত্রের অধিকারী হিসাবে সকলের নিকট সুপরিচিত ছিলেন। তিনি শিক্ষকতা জীবনেও একজন যোগ্য শিক্ষক, যোগ্যতা ও পারদর্শিতার দিক দিয়ে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তিত্ব, দোহা ইন্টারমিডিয়েট স্কুলের পরিচালক হিসেবে যোগ্য অধ্যক্ষের ভূমিকায় সদা তৎপর এবং সার্বিক উপায়-উপাদানকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে উত্তম পন্থায় শিক্ষাদানের পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। লেখকের লেখাগুলোই তাঁর প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, চিন্তার পরিচ্ছন্নতা, সূক্ষ্ম অনুভূতি ও দক্ষ বিশ্লেষণ ক্ষমতার পূর্ণ সাক্ষ্য বহন করেছে। তিনি জীবন ও জগতের বাস্তবতাকে বুঝেছিলেন ও তার পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। সত্যিকার ঈমান নিষিক্ত হৃদয় নিয়ে সুগভীর গবেষণা ও সংস্কারবাদী চিন্তা সহকারে সকল প্রকার কোলাহল ও অন্ধ অনুসরণের প্রভাবমুক্ত হয়ে ইসলামের আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে তিনি অভ্যস্ত ছিলেন।