...বুঝলে ইয়াহিয়া ভুট্টোরা ক্ষমতা ছাড়বে না। শুধু শুধু এইসব বৈঠকের নামে কালক্ষেপণ করছে। নকীবের বাবা রাজনীতি পছন্দ করতেন না। মা বরং দেশের খবরাখবর রাখতেন। নকীব এরপরে হাসান ভাইয়ের বাড়ি পরপর কয়েকদিন গেল। ঐ লােকটাকে দেখার উদগ্র আগ্রহ তার চৈতন্যে। হঠাৎ এক দুপুর বেলা লােকটাকে দেখার সৌভাগ্য হলাে নকীবের। দেখে ভীষণ নিরাশ হলাে। মােটেই রাজপুত্রের মতাে বা নায়কের মতাে চেহারা নয়। মধ্যবয়স্ক, মাথায় রীতিমতাে টাক, ঘাের কৃষ্ণবর্ণ গায়ের রং বলতে গেলে বেশ কুৎসিতই। তবে দৈহিকভাবে বেশ মজবুত। স্যুটপরা একজন ধনী মানুষ। নিউমার্কেটের পার্কিং থেকে সাদা রঙয়ের টয়ােটা গাড়ি নিয়ে ধানমণ্ডির দিকে হাওয়া হয়ে গেল। ঐ রকম মধ্যবয়স্ক কুৎসিত লােকটির সঙ্গে রিমা ভাবী কী সুখ পান, সে কথার সদুত্তর নকীব তখন পায়নি। এখন সে বােঝে রিমা ভাবী ছিলেন কামুকী। হাসানভাই ছিলেন সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী মানুষ। উঁচ রুচিবােধ এবং দেশ প্রেম ছিল হাসান ভাইয়ের চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য। ইচ্ছে করেই হাসান ভাইয়ের বাসায় আর যায়নি নকীব। হঠাৎ পঁচিশে মার্চ সন্ধ্যার দিকে হাসান ভাই উত্তেজিতভাবে সকলকে বললেন সাবধান। ভয়ানক কিছু ঘটতে পারে। মধ্যরাত্রিতে গােলাগুলির শব্দে জেগে উঠলাে নকীবরা। ভয়ংকর সেই রাত্রি। ইপিআর, রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বাঙালির রক্তে ভেসে গেল ঢাকা। কারফিউ ভাঙলে নকীবরা বিভিন্ন ঘােরা পথে বরিশালের গ্রামের বাড়ির দিকে যাবার চেষ্টা চালালেও সফল হলাে না।....