চলনবিল- দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশিতে অপার সৌন্দর্যমণ্ডিত সমৃদ্ধতম জলাভূমি। দেশের সবচেয়ে বড় বিল। একসময় বৃহত্তর পাবনা ও রাজশাহী জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চলনবিল বিস্তৃত ছিল। বর্তমানে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর ও নওগাঁ জেলার কমবেশি জনপদ চলনবিলের আওতাভুক্ত। প্রতিবছর বর্ষায় পলি পড়ে, বসতবাড়ি নির্মাণ হয়। তাছাড়া আগের মতো পানি না আসার ফলে চলনবিলের পরিধি দিন দিন কমে আসছে। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো প্রাচীন চলনবিলের প্রত্যন্ত জনপদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মনুষ্য নির্মিত নানান স্থাপত্য নিদর্শন। শত শত বছরের অনেক নিদর্শনগুলো দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর আড়ালে গাছগাছালি, লতাপাতায় আচ্ছাদিত আর মাটির ঢিবিতে ঢেকে যাওয়াতে অনেক কীর্তি নষ্ট হয়ে গেছে। পরবর্তীতে উদ্ধার হওয়া কিছু নিদর্শন যা এখনো দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা সংরক্ষণে এগিয়ে আসার অভাব পরিলক্ষিত হয় সর্বক্ষেত্রে। অথচ প্রাচীন ইতিহাসসমৃদ্ধ চলনবিলের জনপদে মাজার, মসজিদ, মন্দির, দিঘি, জমিদার বাড়ি, পীর বুজুগের সমাধিসৌধ কালের সাক্ষী হয়ে আজও দর্শনীয় স্থান হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। যা এখনো আগামী প্রজন্মকে ইতিহাস জানতে উৎসাহিত করবে। চলনবিলের পবিত্র মাটিতে অনেক কৃতী সন্তানের জন্ম হয়েছে। শিশুকাল থেকে তারা এ জনপদের আকাশে বাতাসে বড় হয়ে কর্মজীবন শুরু করে নিজে পরিচিত হয়েছেন এবং চলনবিলকেও পরিচিত করেছেন। তাঁদের এই পর্যায়ে আসতে অনেক ত্যাগ, ধৈর্য, পরিশ্রম করতে হয়েছে। তাই কৃতী সন্তানরা চলনবিলের গর্ব। আবার অনেকে শেষ জীবনে এই জনপদের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। এই কীর্তিমানদের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জেনে আগামী প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে।