ঘরে নেংটি ইঁদুরের বাস। গর্তঠেলা ঝুরা মাটি ছড়িয়ে আছে এখানে সেখানে। তারই এক গর্তে ইঁদুর মারার ফাঁদ পাতা ছিল। আচমকা পা গিয়ে ফাঁদে বিঁধে আর তাতেই বুড়ো আঙ্গুলটা ছেঁচে যায়। ঘরের কুলঙ্গিতে ঝালর লাগানো দেয়ালে সাটানো আরশি, তার পকেটে কড়া গন্ধের পারফিউম, লিপস্টিক, মেকাপ-বক্সসহ কতগুলো-সস্তা দরের প্রসাধনী। উত্তেজক পোস্টার সাটানো দেয়ালে জানালা নেই। তবে বালিশবিহীন যে একটি বেড আছে সেটি অবশ্য ঝকঝকে তকতকে। হাসান রাকিব কথাসহিত্যে নবাগত। তাঁর ‘নীলামের ইশতেহার’ উপন্যাসটি বস্তুত তারুন্যখচিত অস্থির যুবমানসের সমকালখচিত মনোপ্রতিবেদন। বেড়ে ওঠার পথে বয়স নামক এক অষ্টাবক্র জটিল মানচিত্রের ছাপ মনে-শরীরে-মস্তিস্কে কেমন সক্রিয়তা জাগাতে পারে তার খানিকটা শব্দভাষ্য এই রচনাটি। হাসান রাকিবের শব্দে গড়া হিমাদ্রি, পারমিতা, নিশিকান্ত, আদিত্য, মন্টু এদের সকলেই হয়তো কোন-না-কোনভাবে আমাদের চেনা। আর যাদের অচেনা মনে হয় তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবধান প্রজন্মের। সমকালীন জীবন, ঘটনা, রাজনীতি, রাজপথ, ক্যাম্পাস এরকম বহুকিছুকে একসঙ্গে করবার ব্যাকুলতা কথাকর্মটির সর্বত্র ছড়ানোÑ শিল্প হয়ে উঠবার এষণা এসবের মধ্যে নিশ্চয়ই বিরাজমান। আমাদের প্রত্যশা হাসান রাকিবের শব্দভুবন সামনের দিনে আরও প্রসারতা পাবে এবং তাঁর জীবনদৃষ্টিও হয়ে উঠবে সুগভীর সংবেদনময়। ড. মহীবুল আজিজ অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়