এক সৌমেন ও অসীম দুরসম্পর্কের মামাতো-পিসতুতো ভাই। অসীম সৌমেনের চেয়ে চার বছরের ছোট। সৌমেন পিতার দ্বিতীয় সন্তান বলে অসীম তাকে মেজদা বলে ডাকে এবং ‘আপনি’ করে বলে। দুই ভাই আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও গ্রাম্য ভাবধারা কেউ পাল্টাতে পারেনি। এ নিয়ে অসীমের সতীর্থরা তাকে কত ব্যঙ্গ করেছে। তবুও অসীম কখনও সৌমেনের অমর্যাদা করেনি। প্রথমত, ছোটবেলার অভ্যাস যে পাল্টাতে পারেনি। দ্বিতীয়ত, বর্তমানে সৌমেন তার এক বছরের জুনিয়র। সিনিয়ার হয়ে সে ‘তুমি' করে বললে মেজদা মনে ব্যথা পেতে পারে। সেজন্য সে সর্বদা সাবধান থাকে এবং সৌমেনকে আরও বেশি সম্মান দিয়ে চলে। সৌমেন লম্বায় প্রায় ছয় ফুট, স্বাস্থ্য ভাল, এক শক্ত-সমর্থ যুবক। সেখানে অসীম অত্যন্ত ছেলেমানুষ। পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চির মতো লম্বা। সবে গোঁফ উঠতে শুরু করেছে। মুখে দাড়ির কোনো চিহ্ন নেই। তিন চারগাছা বোধহয় গজিয়েছিল। অসীম তা কাঁচি দিয়ে ছেঁটে ফেলেছে। ফলে লোকে তাকে স্কুলের ছাত্র ছাড়া কলেজের ছাত্র বলে ভাবতেই পারে না। সেখানে ইউনিভার্সিটিতে পড়া তো দূরের কথা। অনেক সহপাঠি অসীমকে ঠাট্টা করে বলে বর্ণচোরা আম। প্রত্যুত্তরে অসীম শুধু হাসে, কিছু বলে না । তার অমায়িক ব্যবহার এবং দুষ্টুমিষ্টি আচরণের জন্য সকলে তাকে ভালবাসে। সর্বোপরি অসীম দেখতে সুন্দর। অদ্ভুত এক লাবণ্যে ভরা তার দেহসৌষ্ঠব। মেয়েদেরও হার মানায়। নাক সরু, বুদ্ধিদীপ্ত চাহনি উজ্জ্বল শ্যাম গায়ের রং। কমনীয় নিটোল গড়ন। কেন যে ঈশ্বর তাকে লম্বায় একটু খাটো করে দিয়ে সামান্য খুঁত রেখে দিলেন।