ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতাম, গায়ক হব। কিন্তু লিখব ভাবিনি। রাজনীতি ও দাপ্তরিক ব্যস্ততার মাঝে সময় পেলেই কিছু লিখতে মন চাইত। ছোটবেলা থেকেই ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল, তাই আমার চিন্তাগুলো প্রথমে স্থান পেল সেখানেই। পরে সেগুলো আরেকটু গুছিয়ে লেখা হিসেবে চূড়ান্ত করে ফেলতাম। লেখালেখির শুরুতে প্রশ্ন ছিল—কী লিখব? ব্যক্তিগত উপলব্ধিগুলোই লিখতাম তখন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গমাতা, শেখ রাসেল—এসবই হয়ে উঠল আমার লেখার বিষয়বস্তু। লেখাগুলো বিভিন্ন সময় বিক্ষিপ্তভাবে নানা পত্রিকা ও অনলাইনে নিবন্ধ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। সংসদে আমার তিন মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে মনে হলো, এগুলোকে এক মলাটে আটকে ফেলি। সেই চিন্তা থেকেই এই বইয়ের অবতারণা। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর কল্পনা নয়, বাস্তব। মানুষ এর সুফল ভোগ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এবং মাননীয় আইসিটি উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যয়ী নেতৃত্বে এবং নির্দেশনায় আমরা ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে ধাবিত হচ্ছি। লেখা থেকে শুরু করে বই প্রকাশ পর্যন্ত মূল্যবান পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। বিশেষ করে সাংবাদিক বন্ধুরা, যাঁরা আমার লেখাগুলো না ছাপলে আজ হয়তো এই বই প্রকাশ হতো না, তাঁদের প্রতি সর্বাগ্রে ধন্যবাদ। লেখাগুলো এক মলাটে এই প্রথমবারের মতো সংকলিত হচ্ছে। প্রকাশের আগমুহূর্তে পুরো পাণ্ডুলিপি পড়তে বসে আবিষ্কার করলাম, আরেকটু সম্পাদনা করা গেলে আরও ভালো হতো। সময়স্বল্পতায় তেমন নিবিড় সম্পাদনা করা গেল না। বোদ্ধা পাঠকের কাছে তাই ক্ষমা প্রার্থনা করছি। পরবর্তী সংস্করণে পাঠক ও বোদ্ধাদের সুচিন্তিত মতামতের প্রেক্ষিতে সংশোধন-পরিমার্জন হবে, সে প্রতিশ্রুতি রইল। আগেই বলেছি লেখাগুলি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির আলোকে লেখা। তাই তা কোনো একাডেমিক বা তত্ত্বীয় আলোচনা নয়। লেখাতে যা উঠে এসেছে, তা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এসেছে, সময়ের প্রয়োজনে এসেছে। আমাদের প্রযুক্তি খাতের দেশীয় বাজার অনেক বড় ও সম্ভাবনাময়। আমি আইসিটি বিভাগে কাজ করতে গিয়ে সেই বাজারকে আরও বড় করার লক্ষ্যে কাজ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের একটি সভায় ডিজিটাল ডিভাইস আমদানি নয়, রপ্তানির নির্দেশ দিয়েছিলেন। আজ বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস শিল্প, স্মার্টফোনসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। শুধু তা–ই নয়, ওয়ালটনসহ কয়েকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য রপ্তানিতে সাফল্য দেখিয়েছে। আমাদের মেধাবী তরুণ প্রজন্ম অনেক প্রতিভাবান। তাদের অনেকে ৩০ বছরেই সফল স্টার্টআপ। এমন হাজারো সফল স্টার্টআপের তীর্থভূমি হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের অবদান আরও বাড়ানোর লক্ষ্যেই কাজ করছি। আগামীর পথে হাঁটতে হলে অতীত জানা জরুরি। যাঁরা আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন, সেই তরুণ প্রজন্মকে অতীত জানাতেই এই বই লেখা। এসব লেখা যদি কারও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়, তবেই আমার পরিশ্রম সার্থক হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ: এক সফল উন্নয়ন দর্শন শিরোনামে প্রকাশনাটির সঙ্গে জড়িত সকলের প্রতি আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। জুনাইদ আহ্মেদ পলক ৬ নভেম্বর ২০২৩
একজন আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ। তিনি ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪ সালের জানুয়ারি ও ২০১৮ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে বিপুলভোটে জয়লাভ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জুনাইদ আহমেদ পলক ১৯৮০ সালের ১৭ মে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার সেরকোল তেলিগ্রাম-এ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম ফয়েজ উদ্দিন এবং মায়ের নাম জামিলা আহমেদ। তিনি ১৯৯৫ সালে সিংড়া দমদমা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৯৭ সালে রাজশাহী ওল্ড ডিগ্রি কলেজ (বর্তমানে রাজশাহী কলেজ নামে পরিচিত) থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা কলেজ হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এল.এল.বি ডিগ্রি অর্জন করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। তাঁর স্ত্রীর নাম আরিফা জেসমিন (কনিকা)। এ দম্পতির তিন সন্তান। তাঁরা হলো অপূর্ব জুনাইদ, অর্জন জুনাইদ এবং অনির্বাণ জুনাইদ। বাবা মরহুম ফয়েজ উদ্দিনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জুনাইদ আহমেদ পলক বিশ বছর বয়সে আওয়ামী লীগের একজন- সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে যোগ দেন। ২৮ বছর বয়সে ২০০৮ সালে সিংড়া নির্বাচনী এলাকা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। ২০১৬ সালের মার্চে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম জুনাইদ আহমেদ পলককে ‘ইয়াং গ্লোবাল লিডার ২০১৬’ হিসেবে মনোনীত করে। ৪০ বছরের কম বয়সী তরুণদের নাম প্রকাশ করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি Young Bangla এবং CRI-এর উদ্যোগ ও কার্যক্রমের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। ২০১৮ সালে বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণী সংস্থা অ্যাপলিটিক্যাল-এর প্রকাশিত ডিজিটাল গভর্নমেন্টে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান পান জুনাইদ আহমেদ পলক।